মো. আজহারুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের গোপালগঞ্জ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী (এক্সইন) মো. আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে শত কোটি টাকা আত্মসাতের বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, মো. আজহারুল ইসলাম এর আগে কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে গোপালগঞ্জে বদলি হয়ে এসে তিনি নানা কৌশলে প্রভাব বিস্তার করে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর দায়িত্ব নিজের হাতে কুক্ষিগত করেন।
রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব কাজে লাগিয়ে দুর্নীতির সাম্রাজ্য
এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের এক সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা ব্যবহার করে তিনি সওজ প্রকল্পে প্রভাব খাটিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলার গত কয়েক বছরের উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে:
পাটগাতি-ঘোনাপাড়া সড়ক উন্নয়ন
কোটালীপাড়া-রাজের রোড পুনর্নির্মাণ
দক্ষিণ দাসার রোড, টুঙ্গিপাড়া বাইপাস, বাজুনিয়া-রামদিয়া সংযোগ সড়ক
১১৬৬ কিমি বিটুমিনাস সারফেসিং, ৭০ কিমি সিলকোট, ১৫.৫০ কিমি মজবুতীকরণ
১১৫ মিটার সেতু ও ১১০ মিটার কালভার্ট নির্মাণ/পুনর্নির্মাণ
এই প্রকল্পগুলোর প্রায় প্রতিটিতে অতিরিক্ত বিল, অপ্রয়োজনীয় বাজেট বৃদ্ধি, নিম্নমানের কাজ, ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের অনৈতিক সুবিধা প্রদানসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
ডিসির নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার-
স্থানীয় একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন, মো. আজহারুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে প্রকল্প অনুমোদন, বিল পাশ ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
এক ঠিকাদার জানান:
“কমিশন না দিলে কাজ মিলবে না। আর বিল পেতে হলে এক্সইনের ‘বিশেষ ছাড়’ দরকার। ডিসির নাম ভাঙিয়ে তিনি গোপনভাবে প্রভাব খাটান।”
অযোগ্যদের হাতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব-
এইসব অনিয়মের কারণে প্রকৃত ও যোগ্য ঠিকাদাররা বছর বছর কাজ থেকে বঞ্চিত হন। গোপন ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে গঠিত একটি ঠিকাদারি চক্র নিয়মিতভাবে কাজ পাচ্ছে এবং নিয়মিত বিল আদায় করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
দ্রুত তদন্তের দাবি
এলাকাবাসী, ঠিকাদার এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এক্সইন মো. আজহারুল ইসলামের কর্মকাণ্ড তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সওজ প্রধান কার্যালয় এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
এই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত মো. আজহারুল ইসলাম কিংবা গোপালগঞ্জ সওজ বিভাগ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।