ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ী ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা গত বৃহস্পতিবার সকালে রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে দোয়া ও মোনাজাত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর দলীয় সিদ্ধান্তে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথম জামায়াত-সমর্থিত কোনো সংগঠন শহীদ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে গেল।
এ ঘটনাকে একাত্তরে স্বাধীনতাযুদ্ধবিরোধী ভূমিকার বিষয়ে জামায়াতের এত দিনকার দলীয় অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম আরও দেখা যেতে পারে, যা এত দিন জামায়াত করেনি।
দলটির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য জামায়াতে ইসলামীর দলীয়ভাবে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নে যে রাজনৈতিক বিতর্ক চলমান রয়েছে, সেটির বিষয়ে নীতিনির্ধারণী নেতারা এখন আগের চেয়ে বেশি মনোযোগী।
এ ব্যাপারেও শিগগির ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জামায়াতের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে এর জন্য দলটির শীর্ষ নেতৃত্বসহ সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা উপযুক্ত প্রেক্ষাপট ও অনুকূল পরিবেশ বিবেচনায় নিচ্ছে।
এর আগে জামায়াতের দুজন সাবেক কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছিলেন। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে আবদুর রাজ্জাক দলীয় পদ থেকে ইস্তফা পর্যন্ত দিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আর কামারুজ্জামান একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসিতে দণ্ডিত হন। তিনি জামায়াতের তৎকালীন আমিরকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে লেখা এক দীর্ঘ চিঠিতে দলের সংস্কারে কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন।
জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার একাধিক সভায় ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে সবাই একমত না হওয়ায় সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।